ডি ওয়াই এল এম

বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী (নভেম্বর ২০১২)

তান্নি
  • ৩২
  • ৭০
হাউস নং- X-24.... এতটুকু লিখে থেমে যায় তাহিতি। DYLM এর অর্থটা কী কোনোভাবেই মাথায় আসছেনা। মনিটর স্ক্রিনে বার বার ওয়েটিং স্মাইলে শো করছে, আর একটু পর পর BUZZ এ ক্লিক করার বিদঘুটে শব্দ হচ্ছে। তার মানে অপর প্রান্তে তাহিতির উত্তরের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে জ্যাক। আর বেশিক্ষণ না ভেবে এড্রেসটা লিখে এন্টার ক্লিক করে তাহিতি। পুনরায় একই মেসেজ পাঠায় জ্যাক। ডি ওয়াই এলএম মানে জ্যাক কী বুঝাতে চাইছে কে জানে। এর অর্থটা জ্যাকের কাছে জানতে চাওয়াটা বোধগম্য ঠেকছেনা তাহিতির। জ্যাক ভাববে সংক্ষিপ্ত শব্দ দ্বারা কোনো পূর্ণ বাক্য বুঝার জ্ঞান তাহিতির দখলচ্যুত। এতে কিঞ্চিৎ আত্মসম্মানে ঘা লাগতে পারে। এবার প্রসঙ্গ পাল্টাতে চেষ্টা করে সে। দ্রুত লিখে পাঠায়, জ্যাক চলো আমরা মুখোমুখি আলাপ করি। এতে তড়িৎ ভাবান্তর হলো জ্যাকের। কয়েক সেকেন্ড অতিবাহিত না হতেই তাহিতিকে রিকোয়েস্ট পাঠায় ওয়েব ক্যাম একটিভ করার জন্য। তাহিতিও দেরী করেনা। দ্রুত একসেপ্ট রিকোয়েস্ট বাটনে ক্লিক করে। জ্যাক তার ইনভেস্টিগেট রুমে বসে আছে। আশে পাশে অজস্র ইলেক্ট্রনিক্স বস্তুর ছড়াছড়ি। মনিটর স্ক্রিনের ওয়েব ক্যামে ভেসে উঠা তাহিতির মুখটার দিকে উদগ্রীব চোখ দুটো নিবদ্ধ করে জ্যাক। তারপর মাথা ভর্তি স্বর্ণাভ কেশে ভরাট হাতের অঙ্গুলি চালিয়ে মিষ্টি হেসে বলে; লুকিং সো নাইস। প্রতিউত্তরে কিছু বলেনা তাহিতি। হেসে মাথা নেড়ে ‘তাই সূচক ভঙ্গি করে। একটু পরেই জ্যাকের রুমে ধীর গতিতে প্রবেশ করে স্যামুয়েল। একটু বিমর্ষ দেখাচ্ছে তাকে। শুকনো কণ্ঠে বলে; জ্যাক কার সাথে আলাপ করো! ‘শুধু আলাপ নয়, সামনা সামনি কথা বলছি, স্ক্রিনে দেখো, আমাদের সুইট ফ্রেন্ড তাহিতি তিনান। এবার ঘুরে দাড়ায় স্যামুয়েল। চেহারায় ঔজ্জ্বল্য টেনে হাত নাড়ে তাহিতির উদ্দেশ্যে সে। তারপর মৃদু হেসে বলে, কি ব্যাপার তাহিতি, জ্যাকের সাথে চুটিয়ে আড্ডা দেয়া হচ্ছে বুঝি। ‘হ্যাঁ স্যামুয়েল, জ্যাকের সাথে সারাক্ষণই সময় কাটাতে ইচ্ছে করে আমার। এতোই মিষ্টি আমার বন্ধুটি’। মুখে হাসি টেনে সম্মতি সূচক মাথা নাড়ে স্যামুয়েল।
; যাই হোক, কি কথা বলছিলে তোমরা জানতে পারি? পুনরায় প্রশ্ন ছুড়ে স্যামুয়েল। ; ওহ! তোমাকে বলা যাবেনা। এটা আমাদের ব্যাপার,‘ ঠিক আছে ম্যাম, আমি এখন চলি। তাহিতিকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায় স্যামুয়েল। জ্যাকের চোখ দুটো গ্রানাইটের মত ঝকঝকে এবং উজ্জ্বল দেখাচ্ছে। তখনো অপলকে চেয়ে আছে সে তাহিতির দিকে। ‘আমাকে বাংলা ভাষা শিখাবে তাহিতি? হঠাৎ বলে উঠে জ্যাক। ‘সত্যিই শিখবে জ্যাক, তুমি পারবে? বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে জানতে চায় তাহিতি। ‘কেন পারবনা? এবার সত্যিই বিস্মিত হয় তাহিতি। পরিপূর্ণ দৃষ্টিটাকে জ্যাকের দিকে ঘুরিয়ে নেয় সে। একটা মেরুন রঙয়ের স্যুট পরেছে জ্যাক। চুলগুলো একটু পর পর হালকা বাতাসে কপাল ঢেকে দিচ্ছে। অসম্ভব সুন্দর জ্যাক। আজ আরও অনেক বেশী সুন্দর দেখাচ্ছে তাকে। মনে মনে ভাবে তাহিতি। এতো সুন্দর জ্যাক!&ওকে দেখলে কেই বা বিশ্বাস করতে চাইবে যে, ও মানুষ নয়!

ড: ফ্রাঙ্কলিনের মুখোমুখি বসে আছে জ্যাক। দুজনে চুপচাপ। ড: ফ্রাঙ্ককে একটু বিরক্ত মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে কোন বড়সড় কাজে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।
; জ্যাক কি কিছু বলবে? নীরবতা ভেঙ্গে জ্যাক কে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন করে ড: ফ্রাঙ্ক।
; জী না স্যার, আপনিই আমাকে ডেকে পাঠিয়েছেন কিছু বলার জন্য।
; ঠিক বলেছ, আচ্ছা জ্যাক তুমি কি এমন কিছু সংকেত দ্বারা কোনও কিছুর অর্থ ব্যাখ্যা করতে পারবে?’’
; কথাটা ঠিক বুঝিনি স্যার।
; যেমন কেউ কোন সাংকেতিক শব্দ দ্বারা কিছু বুঝাতে চাইল, যার অর্থ ব্যাখ্যা করায় আমরা অক্ষম।
; স্যার বিষয়টা আগে দেখা দরকার। তার আগে কিছু বলা যাচ্ছেনা। তবে আশা করছি খুব একটা জটিল হবে না'। বিনয়ী কণ্ঠে বলে জ্যাক। এবার মুখে উজ্জ্বলতার বিদ্যুৎ ছড়িয়ে পড়ে ড: ফ্রাঙ্কের। বসা থেকে এবার উঠে দাঁড়ান তিনি। তারপর জ্যাকের কাঁধে হাত রেখে প্রশংসিত স্বরে বলল, আমি জানি তোমাকে দিয়েই হবে। তুমি যে সবার চেয়ে আলাদা। তীক্ষ্ণ বুদ্ধিদীপ্ত এবং মেধাবী। পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রোবট তুমি। আশ্চর্যের বিষয় অনেক গুলো মানবীয় গুণাবলীর অধিকারীও তুমি। এই বলে গটগট করে রুম থেকে বেরিয়ে যায় ড: ফ্রাঙ্কলিন। ড: ফ্রাঙ্কলিনের শেষের কথাগুলো কেমন যেন মোটেও ভালো লাগেনি জ্যাকের। কিছুটা হতাশার ভঙ্গিতে এগিয়ে যায় তার রুমের দিকে। বিপ বিপ শব্দ হচ্ছে কোথাও। রিভলভিং চেয়ারের পাশে দেয়ালের সাথে সেট করা প্লেবক্সটার নীল বোতামটা ক্রমশ জ্বলছে, আর শব্দ হচ্ছে। দ্রুত গতিতে প্লেবক্সের পাশে গ্রিন রংয়ের সুইচটা টিপ দেয় জ্যাক। সুইচটায় আঙুল রাখতেই চওড়ায় সাত ইঞ্চি এবং পুরো নয় ইঞ্চি মাপের প্লেবক্স নামক যন্ত্রটার ভিতর থেকে একটা মোবাইলের মতো স্ক্রিন বেরিয়ে আসে। একটু পর আলো জ্বলে উঠে প্লেবক্স স্ক্রিনের। এবার আনন্দে চোখ দুটো চিক চিক করে উঠে জ্যাকের। প্লেবক্সে ভিডিও মেসেজ পাঠিয়েছে তাহিতি। নিশ্চয় অনেক চেষ্টা করেছে সে জ্যাকের সাথে কথা বলতে, সম্ভব হয়নি বিধায় এ কাজটা করেছে। আর দেরি না করে ভিডিওটা প্লে করে জ্যাক। সেখানে জ্যাককে উদ্দেশ্য করে বলছে তাহিতি ‘কীহে প্রাণপ্রিয় জ্যাক, আপনি বুঝি কোনো গবেষণায় ডুবে আছেন। আর আমি আপনাকে খুঁজেই চলেছি। আপনার কিন্তু এখনো বাংলাভাষাটা পুরোপুরি শেখা হয়নি। আর এবার থেকে আমি বাংলা ভাষাতেই শুধু কথা বলবো কিন্তু!’ মনে মনে হাসে জ্যাক। এবং তৎক্ষণাৎ রিপ্লাই করে সে। পরিষ্কার বাংলায় বলে, ‘আমি তোমার মতো বাংলা ভাষাটাকেও ভালোবাসি তাহিতি!’

প্রায় আটাশ ঘণ্টা পার হয়ে গেল। জ্যাকের সাথে কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারছেনা তাহিতি। ইতিমধ্যে পাঁচ পাঁচটা ভিডিও মেসেজ পাঠিয়েছে সে জ্যাকের প্লেবক্সে। কিন্তু কোনো রেসপন্স নেই জ্যাকের। জ্যাক যেখানেই থাকুক, সে চাইলে প্লেবক্সের সমস্ত তথ্য পেতে পারে। দুরে কোথাও বের হবার সময় প্লেবক্সের সাথে তার হাতঘড়িটার মধ্যে একটা সংযোগ স্থাপন করে জ্যাক। যেটা খুবই বিস্ময়কর। এতে করে সে দুর থেকে ও অনায়াসে প্লেবক্সের সমস্ত তথ্য সমূহ জানতে পারে। প্লেবক্স নামের অত্যাধুনিক যন্ত্রটার আবিষ্কারক জ্যাক নিজেই। প্লেবক্স শুধু মেসেজ আদান- প্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটতে থাকা নানান ঘটনার তথ্য উপাত্ত মুহূর্তের মধ্যে সংগ্রহ করার মতো শক্তিশালী নেটওয়ার্ক রয়েছে এই প্লেবক্সে। তাছাড়া এতে আরও কতো ধরনের প্রোগ্রাম রয়েছে সে বিষয়ে হয়তো জ্যাক নিজে ও জানেনা। জ্যাকের এই অসাধারণ প্রতিভার কোনো তুলনা হয়না। এবার ভেতরে ভেতরে একটু অস্থির হয়ে উঠে তাহিতি। জ্যাকের কী হলো! মুহূর্তেই জ্যাকের ভাবনা গ্রাস করে ফেলে তাহিতিকে। প্রযুক্তির বিস্ময়কর আবিষ্কার জ্যাক নামের হুবহু মানুষরূপী রোবটটি। বিশ্বে এই প্রথম অনেক গুলো মানবীয় গুণাবলীর অধিকারী সফল রোবট জ্যাক। আমেরিকান গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক বিজ্ঞানী ড; ফ্রাঙ্কলিন এবং আরও বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানীদের সমন্বয় নিরলস প্রচেষ্টার প্রায় দু যুগের ও বেশী সময় পর জ্যাকের সৃষ্টি। ড: ফ্রাঙ্ক নিজেও অবাক হন জ্যাকের নানাবিধ আচরণ এবং তার স্বকীয় বুদ্ধিমত্তা দেখে। ড: ফ্রাঙ্ক এর ছেলে স্যামুয়েল জ্যাককে একপ্রকার জোর করেই নিজের কাছে রেখে দিয়েছে। এতে স্যামুয়েলের চেয়ে জ্যাকের আনন্দটাই যেন অনেক বেশী। কারণ, জ্যাক সঙ্গ পছন্দ করে। স্যামুয়েল তাহিতির অনেক ভালো বন্ধু। বছর চারেক আগে বাংলাদেশে এনিমেশনের মাধ্যমে ‘কিডস অব সিটি’ নামের একটা মুভি তৈরি হয়। যেটার কাহিনী নির্মাতা তাহিতি নিজেই। মুভিটা অনেক পছন্দের ছিল স্যামুয়েলের। একসময় প্রযুক্তির পথ ধরে পরিচয় ঘটে বাংলাদেশী তাহিতি তিনান এবং স্যামুয়েলের। সেই থেকে অনেক ভালো বন্ধু ওরা। কিন্তু বছর খানেক এর ও বেশি সময় ধরে স্যামুয়ের চেয়ে জ্যাকের সাথেই যেন তাহিতির সখ্যতা বেশি। এটা বুঝতে পেরে কখনো হাসে স্যামুয়েল। কখনোবা বলেই ফেলে; জ্যাকই বুঝি তোমার সব তাহিতি! জ্যাক যদি মানুষ হতো তাহলে তাকে বুঝি তুমি ভালোবেসে ফেলতে। এটা শুনে শুধু হাসে তাহিতি, এর কোনো উত্তর হয়না। তাহিতি নিজেও ভাবে, জ্যাকের সৌন্দর্য এবং বুদ্ধিমত্তা সত্যিই আকর্ষণ করার মতো। কিন্তু তার এসব কিছুই তো সীমাবদ্ধ। তার সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ ভারটা মানুষের হাতে। জ্যাক নিছক একটি মানুষের গড়া যন্ত্র মাত্র। আর ভাবতে ভালো লাগছেনা তাহিতির। অনিচ্ছা সত্ত্বে ও অন্যদিকে মনোনিবেশ করার জন্য অনলাইন এ ঢুঁ মারে সে। মেইল ওপেন করতে না করতেই অনলাইন নিউজ আপডেটের আইকনটা লাফাতে শুরু করে। ওটা ক্লিক করা মাত্র একটু অবাক হয় তাহিতি। বিজ্ঞানীদের সাথে সেমিনারে দাঁড়ানো অবস্থায় জ্যাকের ছবি দেয়া আছে। নিচে লেখা আছে সাইবেরিয়ার কিছুটা উত্তর দিকে UFO এর সন্ধান পাওয়া গেছে। অনুমান করা হচ্ছে গত দুয়েকদিন আগে রাত আড়াইটার সময় ভিন গ্রহ থেকে আসা Unidentified Flying Object (UFO) বা ফ্লাইং সসার নামের দুটি যান দীর্ঘদিন পর পৃথিবী পরিদর্শনে এসেছে। সাইবেরিয়ার কিছুটা উত্তরদিকে তারা প্রায় দশ মিনিটের মত অবস্থান করেছিল। এবং চলে যাওয়ার সময় তারা কিছু সংকেত রেখে গেছে। যার অর্থ বিশ্লেষণ করে জ্যাক জানিয়েছে তাদের রেখে যাওয়া সংকেত এর অর্থ দাড়ায় যে, UFO বা ফ্লাইং সসারের আরোহীরা দুয়েকদিনের মধ্যে আবারো আসবে পৃথিবীতে। এবং একই স্থানে অবস্থান করবে। এ নিয়ে চরম উৎকণ্ঠা এবং ভাবনায় রত আছে নাসার বিজ্ঞানীরা। অবশেষে তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছে যে, সেখানে জ্যাক কে পাঠানো হবে। পৃথিবীতে অনেক বছর আগে আরও বেশ কয়েকবার আগমন ঘটে ফ্লাইং সসারের। বিজ্ঞানীদের এ পর্যন্ত প্রাণান্ত প্রচেষ্টা ছিল ফ্লাইং সসার সম্পর্কে জানা। ফ্লাইং সসার নামক যানের পিছনে তারা বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী যান পাঠিয়েছিল তাদের ফলো করার জন্য। কিন্তু প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে। পৃথিবীর এমন শক্তিশালী যানকে পিছনে ফেলে তার হারিয়ে যায় আড়ালে। বহুবছর ধরে এ নিয়ে বিজ্ঞানীদের কল্পনা জল্পনার শেষ নেই। তবে এ বিষয়টা সম্পর্কে তারা নিশ্চিত যে ভিন গ্রহে ও অন্য কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব আছে। এবং তারা অসম্ভব বুদ্ধিদীপ্ত প্রাণী। আর প্রযুক্তি গত ভাবে তারা পৃথিবীর মানুষ গুলোর চেয়ে হাজারো গুন উন্নত। UFO সম্পর্কে দীর্ঘ সময় ধরে পুষে রাখা কৌতূহলটা আবারো নব উদ্যমে জেগে উঠেছে বিজ্ঞানীদের মনে। তাই নানান পরিকল্পনার পর তারা জ্যাককে UFO এর রহস্য উদঘাটন করার কাজে নিযুক্ত করল। তারা আসলে কী! কোথাকার, কী চায়, ইত্যাদি জানার জন্য জ্যাক যাবে সাইবেরিয়ায়। ড: ফ্রাঙ্কলিন এর জোরালে বিশ্বাস জ্যাকই পারবে প্রায় শত বছরের গুপ্ত এই রহস্যের উদঘাটন করতে। নিউজটা পড়ার পরই যেন শ্বাস নেয় তাহিতি। কেমন যেন একটা কৌতূহল এবং উদ্বিগ্নতা গ্রাস করে তাহিতিকে । জ্যাক কী যাবে সাইবেরিয়ার ওখানে? এ জন্যই নিশ্চয় ঝামেলায় আছে জ্যাক। জ্যাক যেন সত্যিকারের বন্ধু হয়ে উঠেছে তাহিতির। জ্যাককে সত্যি অনেক মিস করছে সে। জ্যাকের পাঠানো চমৎকার বাংলায় লেখা সব মেসেজ গুলো পড়ে তাহিতি, আর অজান্তে মুখ টিপে হাসে।

স্যামুয়েলের সাথে অনেকক্ষণ ধরে কথা বলছে তাহিতি। মাস দুয়েক পর নিউইয়র্ক যাবে তাহিতি, এ নিয়ে মহা আনন্দিত স্যামুয়েল। তাহিতি জানে, কোনো একটা কারণে হয়তো স্যামুয়েলের মন ভালো নেই। তবুও সে তাহিতির নিউইয়র্ক আসার সংবাদে লাফাতে শুরু করেছে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে স্যামুয়েল। চুপচাপ তাহিতি। একটু পর সুযোগ বুঝে স্যামুয়েলকে প্রশ্ন ছুড়ে তাহিতি,
; তোমার কিন্তু কোনো কানে বেশ মন খারাপ স্যামুয়েল তাই না!
; কী ভাবে বুঝলে?
; বারে বুঝবনা কেন?
তুমি জানোনা তাহিতি, জ্যাক সাইবেরিয়া থেকে যতসব উদ্ভট নিউজ পাঠিয়েছে। জ্যাকের পাঠানো তথ্যের জন্য আমার পাপা ড: ফ্রাংক সহ নাসার বড় বড় বিজ্ঞানীরা ওয়েট করছে কিন্তু সে তথ্য পাঠাচ্ছে শুধু কতোগুলো সংখ্যা, যার মাথা মুণ্ডু কিছু নেই।
; কী বলছো স্যামুয়েল? সংখ্যা পাঠাচ্ছে মানে? বেশ আশ্চর্যান্বিত হয়ে প্রশ্ন করে তাহিতি।
; এইতো যেমন, ২১, ১৬, ২, ৪ ইত্যাদি ইত্যাদি।
; আচ্ছা এর দ্বারা কোনো অর্থ প্রকাশ করা যায়না? যেমন সংখ্যাগুলোর স্থানে ইংরেজি অক্ষর বসালে হয়না, যেমন ৪(d), 2(b) এভাবে? এমন ও তো হতে পারে সংখ্যাগুলো দ্বারা ইংরেজির অক্ষর বুঝানো হয়েছে?
; তুমি কি ভাবছো এটা দেখা হয়নি! নানান ভাবে অর্থ খোজার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু ফলাফল শূন্য। জ্যাকের সাথে এ বিষয়ে কথা বললে সে নিরুত্তর থাকে। আজ ফিরে আসবে জ্যাককে। কিন্তু সে বিষয়ে মুখ খুলবে বলে কেন জানি আমার মনে হচ্ছেনা। আমার ধারনা ফ্লাইং সসারে চেপে আদৌ যদি ভিন গ্রহের কোন প্রাণী এসে থাকে তাহলে তারা জ্যাকের মেমোরি কোন ভাবে নেড়েচেড়ে কিংবা এলোমেলো করে দিয়েছে। এটা অযৌক্তিক নয়। কারণ বিজ্ঞানীদের ধারনা ভিনগ্রহ থেকে আগত প্রাণী গুলো প্রযুক্তিগত ভাবে আমাদের চেয়ে অনেক বেশী উন্নত। স্যামুয়েলের কথা গুলো এতক্ষণ গোগ্রাসে গিলছিল তাহিতি। স্যামুয়েলের কথা গুলো শেষ হতেই বলে উঠে সে ‘জ্যাকের পাঠানো অর্থহীন সব তথ্যগুলো সংগ্রহ করে আমাকে পাঠানো যাবে স্যামুয়েল? এবার একটু বিব্রতবোধ করে স্যামুয়েল। ইতস্তত করে বলে ‘কী করবে তুমি? তাছাড়া এগুলো পাপার কাছে। তোমার কাছে পাঠানো সম্ভব হবে কী না বুঝতে পারছিনা। তুমিতো জানো এটা নিয়ে গবেষণা চলছে।
: ঠিক আছে স্যামুয়েল। যদি সম্ভব হয় তাহলে পাঠিও। আর বিষয়টা কেউ জানার ও সম্ভাবনা নেই। তুমি একটা কাজ করো, তথ্যগুলো স্ট্রং পাসওয়ার্ড দ্বারা লক করে তারপর পাঠাবে। পাসওয়ার্ডটা তুমি আমাকে সেলফোনের মেসেজে জানিয়ে দিও। তাহিতির এমন সূক্ষ্ম বুদ্ধিমত্তা ভীষণ ভাবে আকৃষ্ট করে স্যামুয়েলকে। কোনো উত্তর দেয়না সে। একটু নীরব থেকে আবার বলে উঠে তাহিতি, ‘আচ্ছা স্যামুয়েল জ্যাক ফিরে আসার পর ও যদি এ রহস্যের কোনো সমাধান না হয়, জ্যাক যদি এ বিষয়ে মুখ না খোলে তবে কী হবে?
; এ জন্যই আমার মন খারাপ তাহিতি। সে এ বিষয়ে কিছু বলতে না পারলে তার কৃত্রিম ব্রেইনটা পরীক্ষা করা হবে। এমন ও হতে পারে পুরনো সব স্মৃতি মুছে দিয়ে তার মধ্যে নতুন ভাবে সবকিছু সেট করা হবে। এতে সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে জ্যাক।
; এতে করে জ্যাকের অসাধারণ মানবীয় গুণাবলী এবং চমৎকার মেধার ও পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। কিছুটা হাহাকারের মতো শুনালো তাহিতির কথাগুলো।
; ঠিক তাই তাহিতি, বুঝতে পারছিনা জ্যাকের জন্য কী করবো? কী হবে ওর কে জানে!
; ঠিক আছে দেখা যাক, কোনো একটা ব্যবস্থা তো হবেই।
; বুঝলাম, আচ্ছা শোনো আমি আগামী কাল সকালের মধ্যেই তোমাকে জ্যাকের দেয়া সকল তথ্য সমূহ সংগ্রহ করে পাঠিয়ে দিবো। আর রাতেই পাসওয়ার্ডটা জানিয়ে দেয়া হবে তোমাকে। তবে খুব সাবধানে।
; ও নিয়ে তুমি ভেবোনা, আশ্বাসের মৃদু হাসি টেনে বলে তাহিতি। আর কথা বাড়ায়না স্যামুয়েল। মেয়েটার হাসিটাই বলে দেয় কতোটা ভরসা করা যায় এই মেয়েটাকে।

স্যামুয়েলের পাঠানো জ্যাকের দেয়া তথ্য গুলো দেখে কিছুটা হতবাক হয় তাহিতি। এসব কী লিখেছে জ্যাক? বিশ থেকে ত্রিশ পৃষ্ঠার দীর্ঘ তথ্য সমূহের মধ্যে সংখ্যা এবং কিছু চি‎হ্ন ছাড়া আর কিছুই লেখা নেই। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো প্রায় প্রত্যেক সংখ্যার পাশেই বাংলা আকার, উকার, ঋকার ইত্যাদি চি‎হ্ন দেয়া আছে। তথ্যে উল্লেখিত সংখ্যা ভিত্তিক লেখাগুলোর দিকে মনোনিবেশ করে সে। একটু পর মুখটা উজ্জ্বল হয়ে উঠে তাহিতির। সর্বশেষ পৃষ্ঠায় আলাদা করে লেখা দুই-তিন লাইনে বসানো সংখ্যা আর চি‎হ্নগুলো গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করে সে। যেখানে লেখা আছে 8,38→42,36+v, 38→42,36+আকার, 30+আকার, 32→27+আকার, ই কার+43, ই কার+27→ 12, 38, এ কার+27→ 32+আকার, এ কার+38→ 40+উ কার, 32+উ কার............।
লেখাগুলো অনেকভাবে অর্থ মিলাতে চেষ্টা করে তাহিতি। অনেকক্ষণ পর হঠাৎ একটি বুদ্ধি খেলে যায় তার মাথায়। সংখ্যার মাঝখানে বসানো বাংলা চি‎হ্নগুলোই প্রমাণ করে যে, জ্যাক বাংলায় কতটা পারদর্শী হয়ে উঠেছিল। সে এবার বাংলা বর্ণমালার স্বরবর্ণ এবং ব্যঞ্জনবর্ণ মিলিয়ে মোট পঞ্চাশটি অক্ষরের মধ্যে জ্যাকের উল্লেখ করা সংখ্যাগুলো মিলিয়ে দেখে। পঞ্চাশটি অক্ষরের ৮তম অক্ষর এ, ৩৮তম র, অর্থাৎ এর এবং ৪২তম অক্ষর স, ৩৬তম অক্ষর ম, যোগ আকার, এভাবে যার অর্থ দাড়ায় সমাধান। রহস্যের জটিল আঁধার ক্রমশ বিলীন হয়ে যাচ্ছে তাহিতির। কিছুক্ষণের মধ্যে লাইন দুটির অর্থ বের করে ফেলে সে। অর্থটা হল, ‘‘এর সমাধান তাহিতি করতে পারবে শুধু’’ চরম বিস্ময়ে হা হয়ে যায় তাহিতি। এসব কি লিখেছে জ্যাক? সম্পূর্ণ তথ্যটার অর্থ সাংকেতিকভাবে বাংলায় প্রকাশ করেছে সে । এটা কেন করলো জ্যাক? তাহিতিকে বিশ্বের কাছে বড় করে তুলে ধরতে? এই গুরুত্বপূর্ণ সাংকেতিক তথ্যটার রহস্য উন্মোচন করতে পারাটা কতো বড় ব্যাপার এটা জ্যাক জানে। বুঝার বাকী থাকেনা তাহিতির। জ্যাক তার সীমিত মানবীয় আবেগ দ্বারা প্রচণ্ড ভালোবেসে ফেলেছে তাহিতিকে। জ্যাক একদিন বলেছিল তাহিতিকে, dylm?Õ সেদিন কথাটার পূর্ণ অর্থ মাথায় ঢুকেনই তাহিতির। আজ তার কাছে অর্থটা কাঁচের মতোই পরিষ্কার। জ্যাক বারংবার জানতে চেয়েছিল সে জ্যাককে ভালোবাসে কীনা। জ্যাক এতো বড় একটা বিষয়ের সমস্ত কৃতিত্ব তাহিতিকে উৎসর্গ করলো? তাহিতির কাছে বাংলাদেশের অনেক গল্প গাঁথা শুনেছে জ্যাক। শুনেছে দেশের জন্য মহান শহীদদের আত্ম ত্যাগের করুণ কাহিনী। কখনো মুগ্ধ হয়ে বলতো, তোমাদের অনিন্দ্য সৌষ্ঠবে ঘেরা দেশটিকে আমি ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছি তাহিতি! এই মুহূর্তে জ্যাককে আরও বেশি মিস করছে তাহিতি। আর কিছু ভাবার সময় নেই তাহিতির হাতে। যে ভাবেই হোক, আজকের মধ্যেই তথ্যগুলোর পুরো অর্থ বের করে ড: ফ্রাঙ্কলিনদের হাতে পৌঁছে দিতে হবে। কোনো ভাবেই জ্যাককে চাপের মুখে ফেলা যাবেনা। জ্যাক মানুষ না হোক, তবু ও তাকে ভীষণ ভালোবাসে তাহিতি। জ্যাক ও যে ভালোবাসা বুঝে!

পৃথিবী থেকে প্রায় আড়াই লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে ‘ব্লু’ নামের একটি গ্রহ থেকে পৃথিবীতে আগমন ফ্লাইং সসারের। ‘ব্লু’ গ্রহের বাসিন্দার পুরোপুরি মানুষের মতো না হলে ও অনেকটাই মানুষের আকৃতির দেখতে। সত্যিকার অর্থে তারা প্রযুক্তিগত ভাবে পৃথিবীর চেয়ে অনেক অনেক উন্নত। পৃথিবীর চেয়ে তাদের গ্রহের দূরত্ব বেশি হওয়ায় পৃথিবীতে তেমন আসা হয়না তাদের। তারপরও কৌতূহল বশত মাঝে মাঝে হানা দেয় পৃথিবীতে। তেমনি এবার ও পৃথিবী পরিদর্শনে বের হয়ে কিছুটা সময়ের জন্য সাইবেরিয়ার দিকে ল্যান্ড করেছিল তাদের ফ্লাইং সসার। কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত তাদের সসারের একটি মাইক্রো পাওয়ার প্ল্যান্ট হারিয়ে যায়। বেশিক্ষণ খোজা খুঁজি করলে নাসার চোখে ধরা পড়তে পারে বলে তারা দ্রুত সেখান থেকে প্রস্থান করে। যাবার সময় তারা বেশ জটিল কিছু সংকেত দ্বারা দুয়েকদিনের মধ্যে আবার পৃথিবীতে আসার সংবাদ রেখে যায়। যা জ্যাক খুব সহজেই বুঝতে সক্ষম হয়েছে। দ্বিতীয় বার তাদের পৃথিবীতে আসার কারণ মাইক্রো পাওয়ার প্ল্যান্টটা খুঁজে নিয়ে যাওয়া। কেননা তারা তাদের কোনো চি‎হ্ন পৃথিবীর কাওকে দেখাতে কিংবা জানাতে চায়না। পৃথিবীর সাথে কোনো রূপ সম্পর্ক স্থাপনের কোনো ইচ্ছে তাদের নেই। তবে জ্যাক কে দেখে তারা কিছুটা বিস্মিত হয়েছে, কারণ জ্যাকের কার্যকলাপ ছিল অসম্ভব সুনিপুণ। তারা জ্যাকের সাথে আলাপের এক পর্যায়ে জ্যাককে তাদের সাথে ‘ব্লু’ তে ফিরে যাবার আমন্ত্রণ জানিয়েছে...। এতটুকু পড়ে একটু থামে তাহিতি। পুনরায় পড়া আরম্ভ করার আগে ড: ফ্রাঙ্ক এর দিকে একবার তাকায় সে। অপলক দৃষ্টিতে তাহিতির দিকে তাকিয়ে আছেন ড: ফ্রাঙ্ক। ‘আমি কী আবার শুরু করবো স্যার? কিছুটা বিব্রত হয়ে বলে তাহিতি। এবার উঠে দাঁড়ান ড: ফ্রাঙ্ক। তারপর ভারী কণ্ঠে বলেন; আজ রাতে বিজ্ঞানীদের সেমিনারে তোমাকে পুরো তথ্যটা প্রকাশ করতে হবে। সেখানে নাসার বিজ্ঞানীরা উপস্থিত থাকবেন। জ্যাক যে এতোই বুদ্ধিদীপ্ত সেটা আমরা জানলেও এতোটা জানতাম না। তোমার জন্যই জ্যাক আগের মতো অবস্থায় টিকে আছে এবং থাকবে। সুদূর বাংলাদেশের একটি মেয়ে তুমি। ভাবা ই যায়না যে, এভাবে একটি জটিল বিষয়কে তুমি কতো সহজে সমাধান করে দিয়েছো।
; এটার পেছনে জ্যাকের অবদানটা কম নয় স্যার।
; কিন্তু জ্যাক কে এতো কিছু শেখানোর, বুঝানোর কৃতিত্বটা তো তোমারই! জ্যাকের মতো তোমাদের দেশটাকে আমিও ভালোবেসে ফেলেছি তাহিতি। এমন সোনার দেশে তোমার মতো সাহসী এবং মেধাবী সন্তানরা আগামীতে আমাদের সাথে কাজ করবে। এই আমি নিশ্চিত। ড: ফ্রাঙ্কের কথায় আবেগে রুদ্ধ হয়ে আসে তাহিতির কণ্ঠস্বর। কিছু বলতে গিয়েও থেমে যায় সে। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই হুট করে ড: ফা্রঙ্কের নির্দেশে নিউইয়র্ক চলে এসেছে তাহিতি। সবকিছু যেন স্বপ্নের মতো ঘটে গেল এই কদিনে।

তাহিতি বসে আছে জ্যাকের রুমে। সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে রুমের মধ্যে। দুজনেই নীরব। আর না পেরে কথা বলে উঠে তাহিতি।
; কি হল জ্যাক, তুমি চুপ করে থাকবে?
; কি বলব?
; তুমি একবার আমার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছোনা।
; আচ্ছা তুমি কি দেশে ফিরে যাবে তাহিতি? হঠাৎ বলে উঠে জ্যাক।
: হ্যাঁ, যাবো, আবার ফিরে ও আসবো। এভাবেই থাকবো। কিন্তু কেন জ্যাক?
: তুমি আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু। তাই তোমাকে বলা যায়। আমি ভাবছি, পৃথিবীতে আর থাকবোনা।
: কি বলছো তুমি? কোথায় যাবে? কিভাবে যাবে? বিস্ফারিত চোখে জ্যাকের দিকে তাকিয়ে বলে তাহিতি।
: আমি ভিন গ্রহ ‘ব্লু’ তেই ফিরে যাবো তাহিতি। তুমি বুঝবে কিনা জানিনা, আমি প্রতিটা মুহূর্তে এটা অনুভব করি যে, মানবীয় আবেগ কতোটা যন্ত্রণাদায়ক। তোমাদের মতো ভালোবাসা, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, এসব কিছু আমাকেও ছুতে চায়। কিন্তু আমিতো একটা যন্ত্র মাত্র। আমি আর পারছিনা বন্ধু। আমার ভালো লাগেনা....’। আহত চোখে জ্যাকের চোখদুটোর দিকে তাকায় তাহিতি। জ্যাকের চোখ দুটো জ্বল ভর্তি কৌটায় রাখা সুন্দর মার্বেলের মতো লাগছে। যদিও জ্যাকের চোখে কোন জল নেই। ছোট্ট একটা ব্যথা স্পর্শ করে তাহিতিকে। ঠিকই তো বলেছে জ্যাক। এভাবে থেকে কি হবে। জ্যাকের যান্ত্রিক মনটা তাহিতি বুঝে। বুঝে কষ্টটাও। কিছু বলার ভাষা খুঁজে পায় না সে। তাহিতি জানে, যেকোনো উপায়ে পৃথিবী ছাড়বে জ্যাক। সে চলে যাবেই। আর কিছু বলেনা তাহিতি। অজান্তে জ্যাকের শক্ত হাতটা ধরে, তারপর মৃদু হেসে বলে dylm জ্যাক? জ্যাকের গম্ভীর মুখটাতে মূহুর্তে একটুকরো আলো ছড়িয়ে পড়ে। তাহিতির সাথে হাত মিলিয়ে মৃদু হেসে বলে সে, হ্যঁা, আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি বন্ধু।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
তানজিয়া তিথি আপু অনেক সুন্দর ------ অনেক !
নিরব নিশাচর তুমি এত ভালো সাই ফাই লিখবে আমি ভাবতেও পারিনি... চমত্কার লিখেছ
সেলিনা ইসলাম খুবই মাথা খাটানো হয়েছে গল্পে যত্নের পরশটাও ছিল ভাল। গল্পের থিম ও ধারাবাহিকতা বেশ ভাল লাগল। শুভকামনা
অভিমন্যু সোহম সুন্দর একটা গল্প। বেশ মনোযোগ দিয়ে পড়ার মত। ভাল লাগল।
আহমেদ সাবের দুর্দান্ত একটা সাইন্স ফিকশন। যন্ত্র-মানব স্যামুয়েল 'এর মানবিক অনুভূতির অসামান্য প্রকাশ। সাথে তাহিতির বাংলাভাষার প্রতি হৃদয়কাড়া দরদ। এক কথায় অসাধারণ একটা গল্প।
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ অসাধারন লিখেছ বোন ! শুভ কামনা তোমার জন্য ।
এশরার লতিফ চমত্কার গল্প...খুবই ভালো লাগলো.... একটা টেকনিকাল বিষয়: পাসওয়ার্ড প্রোটেক্টেড তথ্য ওই সময় কেউ পাঠাবে না --এখনি তো তথ্য এনক্রিপ্ট করে পাঠানো হয়, এমন কী ২য় বিশ যুদ্ধে তথ্য সাইফার এবং ডিসাইফার করা হতো (যেমন এনিগমা মেশিন)...খুবই ভালো লাগলো আপনার গল্পটি...
ম্যারিনা নাসরিন সীমা বাহ তান্নি তুমি তো সায়েন্স ফিকশন দুর্দান্ত লিখ । আমি মোটেই পারিনা আফসোস !
আজিম হোসেন আকাশ ভাল লাগল। আমার লেথা বিজ্ঞানের চেতনা কবিতাটি ভাল লাগলে ভোট প্রদান করুন ও পছন্দের তালিকায় নিন, অন্যথায় নয়।
জিয়াউল হক আমাকে অবশ্য কয়েক বার পড়তে হল । তাতে দুঃখ নাই । রস টা পেয়েছি পুরোপুরি । ভাল বাসা , বিজ্ঞান , কল্পনা, যুক্তি । অপূর্ব সমন্বয়।

০৪ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪